পায়ের নুপুর দেখেই বান্ধবীকে শনাক্ত করেছি
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২৩, ১০:৩০ পিএম

ছবিঃ একাত্তর পোস্ট
আমার বান্ধবীর লাশ দেখে আমি তাকে চিনতে পারিনি। তার শরীল টুকরো টুকরো হয়ে পড়েছিলো। সব কিছু আলাদা হয়ে গেছে। তার পায়ের নুপুর দেখে আমি তাকে শনাক্ত করেছি। কারণ ওই নুপুর আমি আমার বান্ধবীকে উপহার দিয়েছিলাম।
এভাবেই অশ্রুশিক্ত চোখে কথাগুলো বলছিলেন ভোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কলেজছাত্রী রিমা ও শিখার বান্ধবী সোনিয়া আক্তার। নিহত শিখা ও রিমা সোনিয়ার বেষ্ট ফ্রেন্ড ছিলো।
সোনিয়া বলেন, শিখা সকাল ৮টায় আমাকে ফোন করে বলেছে, বান্ধবী তুই ৯টার দিকে মসজিদ মার্কেটে থাকিস। সেখান থেকে একত্রে কলেজে যামু। একটি রিকশা দিয়ে আমি ও নুসরাত মসজিদ মার্কেট পর্যন্ত যাই। সেখানে গিয়ে আমি তাকে দেখতে পাইনি। কিছুক্ষণ পর ঝুমুর আমাকে কল করে বলে, তোর বান্ধবী শিখা আর রিমা এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে, তুই তাড়াতাড়ি বজলু মামার দোকানের সামনে আয়। আমি বাংলাবাজার থেকে একটি অটোরিকশা নিয়ে বজলু মামার দোকানের সামনে গিয়ে দেখি আমার বান্ধবীর লাশের টুকরা রাস্তায় পড়ে আছে। মানুষজন তাকে ঘিরে রেখেছে। একটু সামনে গিয়ে দেখি রিমাও রাস্তায় পড়ে আছে। রিমা আর শিখা একই বাড়ির। তাই তারা দুজন একত্রে কলেজে আসা-যাওয়া করত। শিখা পড়ালেখায় খুব ভালো ছিল। আমরা তিনজন একত্রে চলাফেরা করতাম। কিন্তু এখন আমার বান্ধবীরা আমাকে রেখে চলে গেল। তাদের এমন মৃত্যু দেখতে হবে তা কোনোদিন ভাবিনি। আমি আমার কলিজার টুকরা দুইটা বান্ধবীকে হারালাম।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষে কলেজের আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাড়ি থেকে বের হয়ে অটোরিকশা যোগে কলেজে যাওয়ার পথে বাস চাপায় শিখা ও রিমার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাদের বহন করা অটোরিকশা চালকসহ মোট ৪ জনের প্রাণহানি ঘটে।
নিহত শিখা ও রিমা ভোলার দৌলতখান উপজেলার হালিমা খাতুন মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের দুজনের বাড়ি ওই উপজেলার মধ্য জয়নগর গ্রামে।