ম্যাজিক দেখিয়ে দলকে জয়ী করলেন অধিনায়ক

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৪২ পিএম


ম্যাজিক দেখিয়ে দলকে জয়ী করলেন অধিনায়ক

ছবিঃ সংগৃহীত

একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রিসবেনের দ্য গ্যাবায় স্নায়ুক্ষয়ী এই ম্যাচে বাংলাদেশের করা ১৫০ রানের জবাব দিতে নেমে ১৪৭ রানে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ফলে ৩ রানে জিতে গেলো বাংলাদেশ।

আউট ধরে নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়রাও মাঠ ছেড়ে উঠে যায়। কিন্তু ছোট গল্পের মত ‘শেষ হইয়াও হইলো না শেষ’- বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের ম্যাচের শেষটা তখনও বাকি ছিল। মুজারাবানি আউট হয়েছেন কি না, থার্ড আম্পায়ারকে দেখতে বলেন ফিল্ড আম্পায়াররা। সেখানেই বাধে বিপত্তি। রিপ্লাইতে দেখা যায়, বল স্ট্যাম্পে আসার আগেই বল গ্লাভসে পুরে নেন নুরুল হাসান সোহান।

নিয়ম অনুযায়ী ব্যাটার তো নটআউটই থাকলেন, সঙ্গে বৈধ বল হয়ে গেলো ‘নো’ বল। খেলোয়াড়রা বাউন্ডারি লাইন পার হয়ে গেলো, উইকেট পরিচর্যার জন্য রোলার নিয়ে কর্মীরাও মাঠে প্রবেশ করে ফেলেছে। এ সময় সাইটস্ক্রিনে জ্বলজ্বল করে উঠলো ‘নট আউট’ অ্যান্ড ‘নো বল’।

সুতরাং, বাংলাদেশ দলের ফিল্ডারদের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটারকে আবারও মাঠে নামতে হলো শেষ বল খেলার জন্য। একই সঙ্গে জিম্বাবুয়ে ইনিংসের সঙ্গে যোগ হলো এক রান। একই সেঙ্গ ফ্রি-হিট পেলো জিম্বাবুয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের সমর্থকদের স্বস্তি দিয়ে শেষ বলটিতে কোনো রান নেয়া থেকে মুজারাবানিকে বিরত রাখতে পারলেন মোসাদ্দেক। ৪ রানের জায়গায় বাংলাদেশ জিতলো তিন রানে।

শেষ বলে মুজারাবানি কোনো রান করতে পারেননি। রুদ্ধশ্বাস এই ম্যাচে বাংলাদেশের করা ১৫০ রানের জবাব দিতে নেমে ১৪৭ রানে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। শেষ বলে আউট হইয়েছেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটার ব্লেসিং মুজারাবানি। শেষ বলেও উইকেট পেলেন মোসাদ্দেক। এবারও স্ট্যাম্পিং।

জিম্বাবুয়ের ইনিংসের ১৮তম ওভারে বল করতে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তখন জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ১২ বলে ২৬ রান। উইকেটে আছেন ৩৯ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত থাকা শন উইলিয়ামস এবং ২২ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকা রায়ান বার্ল। এই ওভারের ৪র্থ বলে উইলিয়ামসকে দুর্দান্ত এক ওভার থ্রুতে রান আউট করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান সাকিব আল হাসান।

এর পূর্বে ব্রিজবেনে সকলে দেখেছে তাসকিন-মুস্তাফিজ শো। তাসকিন ও মুস্তাফিজের বোলিং তোপে দিশেহারা হয়ে পরে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বল পেয়ে তুলে মেরেছিলেন ওয়েসলি মাধেভেরে। তা ক্যাচ ধরেন মুস্তাফিজ। নিজের পরের ওভারে আবারো উইকেট তুলে নেন তাসকিন। লেন্থের বল উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ তুলে দেন অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন। তিনি ফিরে যান ৮ রান করে।  

এরপর মুস্তাফিজ শো। নিজের প্রথম ওভারেই প্রথম তুলে নেন শুমবাকে। এরপর রাজাকে আউট করে জিম্বাবুয়েকে বড় চাপে ফেলে দেন এই কাটার মাস্টার। চাকাভাকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন তাসকিন। চাকাভা করেন ১৫ রান।

কিন্তু এরপর দলের হাল ধরেন উইলিয়ামস-বার্ল। তাদের গড়া ৬৩ রানের জুটি জিম্বাবুয়েকে জয়ের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সাকিবের ওভারে রান আউট হন উইলিয়ামস। এরপরই ম্যাচটা চলে যায় বাংলাদেশের হাতে। শেষ পর্যন্ত নানান নাটকীয়তার পর জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারায় বাংলাদেশ।  

এরআগে নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ ইনিংসে ভর করে জিম্বাবুয়ের সামনে ১৫১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই চাপে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে ৩২ রান তুলতেই সৌম্য ও লিটনকে হারিয়ে বসেছে টাইগাররা।

শান্তর সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ২০ বলে এক চারে সাকিব করেন ২৩ রান করে আউট হন সাকিবও।

নাজমুল হোসেন শান্ত হাফ সেঞ্চুরি করেন। আউট হওয়ার আগে এ ওপেনার খেলেছেন ৭ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৫৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস। যা তার ক্যারিয়ারসেরা।  

শান্ত'র ৭১ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ করেছে ৭ উইকেটে ১৫০ রান। শেষ তিন ওভারে আশানুরূপ ব্যাট করতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ তিন ওভার থেকে এসেছে মাত্র ২৪ রান।  

প্রথম ১০ ওভারে রান ছিল ৬৩, শেষ ১০ ওভারে এলো ৮৭। কোনোমতে হলো দেড়শ রান।

শুরু থেকে একপ্রান্ত ধরে রেখে দলীয় সংগ্রহ বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন ওপেনার শান্ত। ফিফটির পর ১৬তম ওভারে ১৭ রান নেন শান্ত। তবে পরের ওভারেই তাকে থামিয়ে দিলেন সিকান্দার রাজা।

শেষ ওভারে গাভারার দ্বিতীয় ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ১০ বলে ৭ রান এসেছে তার কাছ থেকে। পরের বলেই রানআউট হয়ে ফিরেছেন নুরুল হাসান সোহান। মাত্র ১ রান করতে পেরেছেন তিনি।

শেষ ২ বলের জন্য ব্যাট হাতে নামেন মিরাজের বদলে একাদশে সুযোগ পাওয়া ইয়াসির আলি রাব্বি। তিনি এক রান নিয়ে আফিফকে স্ট্রাইক দেন। শেষ বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন আফিফ।

Link copied