শেয়ারবাজারে মূল্য সংশোধন
প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:৫৪ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত
টানা নয় কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর রোববার দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে দ্বিগুণের বেশি প্রতিষ্ঠান।
পতনের বাজারে ছিল ক্রেতা সংকটও। এতে বড় হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকানো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। নতুন করে ১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে। একই সঙ্গে ফ্লোর প্রাইসের ওপরে থাকা চারটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম একদিনে যতটা কমা সম্ভব ততটাই কমেছে।
ঈদের আগে ও পরে মিলিয়ে টানা নয় কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়ে। একই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি। গত বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। এর পরেই শেয়ারবাজারে এই দরপতন দেখা গেলো। তবে এই দরপতনকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, টানা নয় কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার কারণে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এর ফলে বাজারে বিক্রির চাপ আসে। এই বিক্রির চাপের কারণেই দরপতন হয়েছে। এটি স্বাভাবিক দরপতন।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আধাঘণ্টাও স্থায়ী হয়নি। বরং লেনদেনের সময় যত গড়াই দাম কমার তালিকা তত বড় হতে থাকে। ফলে বাড়তে থাকে সূচকের ঋণাত্মক প্রবণতা।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৮টির এবং ২০০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কামার তালিকায় থাকা ১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ পরিমাণ কমেছে। এর মধ্যে ১৪টির দাম কমে ফ্লোরে এসেছে ঠেকেছে।
এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ২০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
শেয়ারবাজারের এই দরপতন সম্পর্কে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বলেন, ঈদের আগে ও পরে টানা কয়েক কার্যদিবস শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এতে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সে কারণেই বিক্রির চাপ বেশি ছিল এবং মূল্যসূচক কমেছে। এটি স্বাভাবিক দরপতন।
এদিকে, মূল্যসূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৯৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৬৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৭৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের। কোম্পানিটির ৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ৮২ লাখ টাকার। ২৯ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আমরা নেটওয়ার্ক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, রহিমা ফুড, জেনেক্স ইনফোসিস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, সোনালী পেপার এবং অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২০৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ১১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।